কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) সিনিয়রকে নাম ধরে ডাকাকে কেন্দ্র করে শাখা ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষের কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন।
গতকাল রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল বিকেলে ধীরেন্দ্রনাথ হল শাখা ছাত্রলীগের কর্মী ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ১৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী রিয়াজুল ইসলাম বাঁধন নিজের রুমে অর্থনীতি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী তানজিম আহমেদ সোহাগের নাম ধরে ডাকেন।
ওই রুমের বাসিন্দা সোহাগের বন্ধু ওয়াকিল বিষয়টি শুনলে ১২ ব্যাচের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী শাফী, সোহাগ ও ওয়াকিল ২০০৩ নং রুমে বাঁধনকে ডেকে শাসান। একপর্যায়ে তারা চড় মারেন। এরপর বাঁধন বিষয়টি জানালে ১৩ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়। রাত সাড়ে ১০টার দিকে ২০০৩ নং রুম থেকে শাফীকে ডেকে নিয়ে যান ১৩ ব্যাচের সাদমান।
এ সময় হানিফ, সাদমান, মিরাজ, রবিনসহ ৮-১০ জন শাফীকে এলোপাতাড়ি মারধর করেন। পরে হল শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ১৩ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের ৩০৩ নং রুমে একদফা মারধর করেন। এরপর শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল ইসলাম মাজেদের রুমে (৩০১) ডেকে নিয়ে বিচারের নামে আধঘণ্টা ধরে ফের তাদের মারধর করেন শাখা ও হল ছাত্রলীগের নেতারা। এ সময় ১৩ ব্যাচের বেশ কয়েকজন আহত হন।
এ বিষয়ে ১৩ ব্যাচের কর্মী হানিফ ভূঁইয়া বলেন, আমাদের বন্ধুকে মারধরের বিষয়ে জানতে তাদের রুমে যাই। তবে আমরা কাউকে আঘাত করিনি।
অন্যদিকে ১২ ব্যাচের শাফী বলেন, আমি হলের সিনিয়র হিসেবে জুনিয়রদের আচরণের বিষয়ে তাদের বুঝিয়ে বলি। কিন্তু তারা এসে আমাকে বেধড়ক মারধর শুরু করে। আমি এর বিচার চাই।
ধীরেন্দ্রনাথ হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাফিউল আলম দীপ্ত বলেন, হলের অভ্যন্তরীণ একটি বিষয়ে ১২ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ১৩ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। আমিসহ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক বসে বিষয়টি মীমাংসা করে দিয়েছি।
এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল ইসলাম মাজেদ বলেন, আজকের ঘটনায় জড়িত সকলে হল শাখা ছাত্রলীগের কর্মী। নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি থেকে হাতাহাতি হয়েছে। আমরা সিনিয়রদের সঙ্গে বসে বিষয়টি সমাধান করেছি। পরবর্তীতে সভাপতির সঙ্গে কথা বলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
ঘটনাটি নিয়ে হল প্রভোস্ট ড. মোহাম্মদ জুলহাস মিয়ার সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমি জানতে পেরেছি। এটি হলের অভ্যন্তরীণ বিষয়, আমরা বসে বিষয়টি সমাধান করে দেব।
অন্যদিকে, প্রক্টর ড. কাজী মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন বলেন, আবাসিক হলের বিষয়গুলো প্রভোস্ট দেখভাল করেন। হল প্রভোস্টসহ হলের যারা দায়িত্বে রয়েছেন তারা প্রক্টর বরাবর অভিযোগ দিলে বিষয়টি খতিয়ে দেখব।